কবিতা

তবুও নারী || পিতাম্বর ধনঞ্জয় ঘোষাল

একদিন হয়তো বা চলে যেতে পারে
জীবন শূন্য করে হারিয়ে যেতে পারে
তখন জীবন কি তবে স্তব্ধ হয়ে যাবে!
শুধু এক নারী না পেয়ে যদি
হৃদয় হয়ে যায় এমন নীরব !
তাহলে ভোরের নতুন সূর্য্যের আলো
পাতা হতে ফুলের পাপড়ি হতে
ঝরে পড়া শিশিরের জল
পাহাড়ি ঝর্নার ঝরে পড়া জল
এ হৃদয় দেখবে কেমন করে !
নারীর নিবিড় ভালোবাসা কি
স্বচ্ছ নদীর জলে মাছের মতন !
নতুন অপুষ্ট কচি ধানের মতো ?
পরমাণ্ণের মতো সুরভিত সুমধুর!
অথবা মধ্য রাতের রাগের মতন
হৃদয় নিংড়ে যত তাপ
গলিয়ে দিতে পারে ?

রাত্রির আঁধার ঘিরে এলে
ঘুমের আবেশ মাখানো গন্ধ নিয়ে
কেউ কি আসে -বিছানার গন্ধ নিয়ে
তারপর নিরুপদ্রব এক ঘুম
ঠিক গর্ভস্থ শিশুর মতন কুঁকড়ে
নিশ্চিন্ত পরম এক সুখের আবেশ।
হৃদয় স্তব্ধ হয়ে যদি যায়
তাহলে ঘুমাবে কখন?
তবুও কোন এক নারী স্বপনের
মাঝে আসে , আবার চলে যায়
হৃদয় বিকল করে কোথায় যে যায়!
ভোরের ঘুম ভাঙ্গা পাখির গুঞ্জরণে
জেগে উঠে দেখি নদীর জলে
প্রথম সূর্য্যের আলোর ঝিকিমিকি
ছোট ছোট পাখিদের ওড়াউড়ি
শিশুর মুখের গন্ধের মতো
সুবাস বয়ে আসে কোন ঘাস ফুল হতে
হৃদয় তখন জেগে উঠে
হৃদয় তখন নেচে উঠে
তখন সব তুচ্ছ মনে হয়
নির্বিকার নির্বিকল্প ভাবনায় ভুলে যাই
ভুলে যাই নারী ছিল কোনোদিন
এ হৃদয় জুড়ে —

তবুও অগণন মানুষের দ্বেষ ঘৃনা
অথবা অগণন মানুষের প্রেম
গাছ পাখি ফুল ভোরের শিশির
এই সব নিয়ে বেশ বেঁচে আছি
তবু যেন এক ক্ষতের মতন
এক গভীর নারী হৃদয় নাড়িয়ে দেয়
তখন কেন মনে হয় কেউ ছিল
কেউ ছিল এক স্বপ্নের মতন
যে হৃদয় ভাসিয়ে চলে গেছে
স্বপ্নের ওপারে -ঘুমের ওপারে
আসে না আর কখনও ফিরে
তাহলে কি হৃদয় স্তব্ধ হয়ে গেছে?
জানিনা তো,
বুকের ভিতরে তো এখনও
ধক ধক বাজে।

উখরা : বর্ধমান :
পশ্চিম বাংলা :
ভারত।