রম্য গল্প

মোবাইল ফোনে প্রেম || মোঃ জাহাঙ্গীর আলম

প্রেমিক প্রেমিকার মাঝে কথা হচ্ছে।তাদের দু’জন মিলে ফোনের মাধ্যমে অনেক দিন থেকে প্রেম চলছে।ছেলের বাসায় কিছুই নেই তার থাকার  মতো একটা ভালো ঘর নেই। কিন্তু প্রেমিকা বলছে আচ্ছা তুমি কি করো?প্রেমিক আমি একটা কোম্পানিতে চাকরি করি।প্রেমিকা বেতন কত পাও?প্রেমিক ২০,০০০ বিশ হাজার টাকা মাসে পাই। প্রেমিকা তাহলে অনেক ভালো।অথছ ছেলেটা একটা মুদির দোকানে থাকে তাতে তার সংসার অনেক কষ্টে চলে আর কি।ছেলেটা একটা বিয়েও করেছে এবং একটি বাচ্চাও আছে।

প্রেমিক- প্রেমিকাকে বলছে আচ্ছা তুমি কী কর?প্রেমিকা- আমি এবার ইন্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিবো। প্রেমিক ঘাবরে গেলো এই ইন্টার আবার কি,যাই হোক এমনি বলছে বেশ ভালো তো।প্রেমিকা-প্রেমিককে বলছে তুমি কী পাস করে চাকরি করছো?
প্রেমিক-বি এ পাস করে।অনেক ভালো করেছো।

কিছুদিন পরে প্রেমিকার সাথে কথা হচ্ছে প্রেমিকের।
আচ্ছা সোনা তুমি কেমন আছো?প্রেমিকা-আমি  অনেক ভালো আছি জান।তুমি কেমন আছো?প্রেমিক-আমিও ভালো আছি।প্রেমিক-তোমার ছুটি কেমন কাটলো?প্রেমিকা-বেশি ভালো না   জান।প্রেমিক-কেন জান? প্রেমিকা-আমার সামনে পরীক্ষা তাই পড়াশুনায় ব্যস্ত কোথাও বেড়াতেও পারিনি।
প্রেমিক-আচ্ছা ঠিক আছে ভালো করে পড়াশুনা করো,আর ভালো ফলাফল অর্জন করতে হবে।

প্রেমিক মুদির দোকানে কাজ করে তাতে সংসার চালায় আর মোবাইলে টাকা তুলে প্রেমিকার সাথে কথা বলে।প্রেমিকা হঠাৎ করে একদিন বলছে আচ্ছা জান আমার পরীক্ষা তো শেষ তোমার সাথে সাক্ষাৎ করতে চাই, তুমি কী বলো?প্রেমিক আচ্ছা কোথায় দেখা করবে? প্রেমিকা কেন তোমার বাসায়।প্রেমিক আরে না আমার বাসায় আগেই যাওয়া যাবে না আগে অন্য কোথাও দেখা করি তারপর। প্রেমিকা আচ্ছা তোমার বাড়ির পাশের কারো একটা ফোন নাম্বার দাওতো আমি তোমার সম্পর্কে জানবো।প্রেমিক-ভাবছে কার নাম্বার দেই! অনেক ভেবে চিন্তে তার এক পাশের বাড়ির চাচাতো ভাইয়ের নাম্বার দিতে গিয়ে তার দোকানের মালিকের নাম্বার দিয়ে দেয়।প্রেমিকা-অন্য একটা নাম্বার দিয়ে সেই নাম্বারে ফোন করে। মালিক ফোন ধরে বলছে কে বলছেন?প্রেমিকা আচ্ছা আপনি রাজের বন্ধু বলছেন?মালিক কোন রাজ?প্রেমিকা-আরে কোম্পানিতে চাকরি করে অমুক গ্রামে বাড়ি।এই যে তার নাম্বার। মালিক নাম্বার চেক করে দেখে তার দোকানের বল্টু মিয়ার নাম্বার। মালিক কিরে বল্টু তুই কার সাথে কথা বলিশরে।সে আমাকে ফোন দিয়ে বলে আপনি অমুকের বন্ধু বলছেন।প্রেমিক বল্টু আহারে খাইছে এবার নাম্বার দিমু কার আর নাম্বার দিছি মালিকের।আল্লাহ্ তুমি আমায় বাঁচাও।

প্রেমিকা-প্রেমিককে ফোন দিয়ে বলছে,তুমি কার নাম্বার দিলা সে তোমাকে চিনতে পারছে না।প্রেমিক আসলে বন্ধুর নাম্বার দিতে গিয়ে বসের নাম্বার দিয়ে ফেলেছি।তুমি আমায় ভুল বুঝ নয় জান।প্রেমিকা আবার ঐ নাম্বারে ফোন দিয়ে আচ্ছা আপনি কি অমুককে চিনেন। মালিক চিনবো না মানে হেয় তো আমার দোকানে কাজ করে আর আমি তারে চিনবো না।প্রেমিকা দোকানে কাজ করে মানে?আরে সে আমার দোকানে কাজ করে অনেক কষ্টে তার বউ বাচ্চা নিয়ো সংসার চালায়।আর আমি তারে চিনবো না।প্রেমিকার বুঝতে আর বাকি রইলো না। প্রেমিকা প্রেমিককে অন্য একটা নাম্বার  দিয়ে বলছে তুমি চাকরি কর তাই না আচ্ছা তোমার কোম্পানির নামটা কী?প্রেমিক-আসলে আমি একটা মুদির দোকানে কাজ করে আমি কোনো কোম্পানিতে চাকরি করি না।প্রেমিকা এবার বুঝতে পারলো এভাবে আর ফোনে কাউকে ভালোবাসা যাবে না।আমি একজন শিক্ষিত মেয়ে হয়ে এমন কাজ করতে পারি না।আমি এটা সবাইকে বলতে চাই আর কেউ যেন আমার মতো ধোকা না খায়। সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আর ফোনে বা ফেসবুকে কাউকে ভালোবাসবেন না।আল্লাহ্‌ হাফিজ