সাহিত্য বার্তা

“ শিল্পকলা পদক ” পেলেন সৃজনশীল সংগঠক আমিনুল ইসলাম মিঠু ।। সুশান্ত কুমার রায়

জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলার কেন্দ্রীয় সহ-সাহিত্য সম্পাদক ও লালমনিরহাট বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলার সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মিঠু লালমনিরহাট জেলা শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃক প্রদত্ত “ শিল্পকলা পদক-২০১৮ ” সৃজনশীল সংগঠক এর সম্মাননা লাভ করেছেন। গত ১৮ জুন জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে লালমনিরহাট-৩ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব গোলাম মোহাম্মদ কাদের আমিনুল ইসলাম মিঠুর হাতে এই সম্মাননাপত্র, উত্তরীয়, মেডেল ও দশ হাজার টাকা তুলে দেন । লালমনিহাট জেলায় শিল্প-সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ২০ জন গুণী ব্যক্তিকে “ জেলা শিল্পকলা সম্মাননা ” প্রদান করা হয়।

লালমনিরহাট জেলার সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অতি পরিচিত একটি মুখ আমিনুল ইসলাম মিঠু। ১৯৭৫ সালে ১১ এপ্রিল লালমনিরহাট সদরের পুরান বাজারে জন্ম গ্রহন করেন। পিতা প্রয়াত মৌলভী সাহাব উদ্দিন সরকার ও মাতা আছিয়া বেগম। দশ ভাই-বোনের মধ্যে কনিষ্ঠ। আমিনুল ইসলাম মিঠু সাহিত্যাঙ্গণে মেধা, মননে আপন আলোয় উদ্ভাসিত। ছোটবেলা থেকেই তাঁর ছবি আঁকার প্রতি খুব আগ্রহ ছিলো। যদিও সেই সময়ে এখনকার মতো রঙ পেন্সিল ও ছবি আঁকার বিভিন্ন উপকরণ পাওয়া যেতো না। ফলে কলম ও পেন্সিল দিয়েই বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকতেন। কলম ও পেন্সিল দিয়ে বিভিন্ন মনীষীর ছবি এঁকে প্রশংসিত হন এবং অনেক পুরস্কারও পেয়েছেন । ১৯৮৪-১৯৮৫ সালে ন্যাশনাল একাডেমি ফর প্রাইমারি এডুকেশন [NAPE] কর্তৃক পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় জেলা পর্যায়ে প্রথম স্থান পরবর্তীতে বিভাগীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে সকলের নজর কাড়েন। গল্প উপন্যাস, কবিতার বই পড়তে ভালবাসেন। আর পড়তে পড়তেই এক সময় লেখালেখির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেন। ভালবাসেন কবিতা, হৃদয়ে লালন করেন কবিতা, গভীরভাবে ভালবাসেন দেশ, মা, মাটি ও মানুষকে। শব্দের দ্যোতনা ও ব্যঞ্জনায় বাঙময় করে তোলেন কোন বিষয় বৈভবকে । এভাবেই ২০০৭ সালে যৌথ কাব্যগ্রন্থ “ পদ্যে আঁকি স্বপ্নের সোপান ” ২০০৮ “ কাঠ পোকাদের দখলে নিরবতা ” ২০১৫ সালে একুশের বইমেলায় প্রকাশিত হয়।

তার লেখা প্রথম উপন্যাস “ স্বপ্নলোকের খেয়া ” ২০১৩ সালে “ মৃত্যুঞ্জয়ী বঙ্গবন্ধু ” একুশের বইমেলায় প্রকাশিত হয় । বর্তমানে তাঁর প্রকাশিত লেখা ছোট গল্প চল্লিশটির উপরে এছাড়াও কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, নাটক ও প্রচুর গান লিখেছেন । রাহু, উত্তরের মেঘ, ও বোকারাজা তার উল্লেখযোগ্য নাটক এবং ওপারের স্বপ্নের হাতছানি, প্রতিবিম্ব, স্বপ্নলোকের খেয়া ও মিয়াবাড়ি তাঁর উল্লেখযোগ্য উপন্যাস। তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়ে আসছে শিল্প-সাহিত্যের ছোট কাগজ “ মৃত্তিকা ”। ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন জুম্মাপাড়া স্পোর্টিং ক্লাব । বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সাধারণ সম্পাদকের পদ অলঙ্কৃত করেন ২০০১ সালে। পর্যায়ক্রমে রঙ্গপুর গবেষণা পরিষদ, জাতীয় কবিতা পরিষদ, সাহিত্য পরিষদ, বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ, কবি সংসদ বাংলাদেশ, স্বর্ণামতি নন্দিনী সাহিত্য ও পাঠচক্র, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, লালমনিরহাট জেলা শাখা কমিটির সম্পাদক সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিষ্ঠা ও সততার সাথে স্বমহিমায় দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সাংগঠনিক দক্ষতার জন্য তাঁকে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাহিত্য সম্পাদক পদে মনোনীত করেছেন। নিজের প্রতিষ্ঠিত কবি সাহিত্যিকদের সংগঠন “ লালমনিরহাট লেখক ফোরাম ” কার্যক্রম শুরু করে স্থানীয় কবি সাহিত্যিকদের নিয়ে চালিয়ে আসছেন। ২০০২ সালে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন ও সংগীত শিক্ষার জেলা পর্যায়ের একটি নন্দিত সংগঠন “ বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা ”। বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সাংগঠনিক কার্যক্রম তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও যোগ্যতার সাথে দীর্ঘদিন পালন করে আসছেন ।